বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ছাত্রদল নেতার গুদামে সাড়ে ১৭ লাখ টাকার ভারতীয় কম্বল-সিগারেট যে ১২ নির্দেশনা দিলেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল কাদের আসেন, আমার বাসায় আসেন: মির্জা ফখরুল পিআইবির মহাপরিচালক হলেন ফারুক ওয়াসিফ চাকরির বয়সসীমা ৩৫ চান প্রশাসন ক্যাডাররা, জনপ্রশাসনকে জানাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বন্যা দেখতে গিয়ে নদীতে পড়ে গেলেন দুই এমপি ফ্যাসিবাদে জড়িত কবি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের আইনের আওতায় আনা হবে গণহত্যায় উসকানিদাতা কবি-সাংবাদিকদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে : নাহিদ ইসলাম সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার সুফল পাবে জনগণ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমরা সরকারকে সময় দিতে চাই : মির্জা ফখরুল
গাজায় আবারো ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করল মার্কিন সেনাবাহিনী

গাজায় আবারো ত্রাণ বিতরণ বন্ধ করল মার্কিন সেনাবাহিনী

স্বদেশ ডেস্ক:

গাজায় ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ আবারো বন্ধ করেছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। ত্রাণ বিতরণকারী স্বেচ্ছাসেবীদের সুরক্ষার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া পর্যন্ত তারা এ কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে।

বেশ কয়েকবার বন্ধের পর ২৩০ মিলিয়ন ডলারের ত্রাণ বিতরণ আবার শুরু করেছিল। মার্কিন সামরিক বাহিনী মঙ্গলবার এটি পরিদর্শনের জন্য সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। এবারই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম তাদের কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করেছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে গাজায় ঢুকতে দেয়া হয়নি।

মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে প্রথম চালু হওয়া প্রকল্পটি সমুদ্র উত্তাল থাকার কারণে সাম্প্রতিক বিরতির পরে গত সপ্তাহে আবার কাজ শুরু করে।

মঙ্গলবার সাংবাদিকরা দেখছিলেন, মেশিনগান নিয়ে মার্কিন সেনারা জেটির অপারেশন পরিচালনা করছিলেন। মানবিক ত্রাণবোঝাই ট্রাক বহনকারী মার্কিন জাহাজগুলো জেটিতে নোঙর করেছে।

ইসরাইলি ও সাইপ্রিয়ট চালকরা ট্রাকগুলোকে জাহাজ থেকে নামিয়ে ৪০০ মিটার (৪৩৭ গজ) বাঁধ দিয়ে সৈকতে নিয়ে যায়, যেখানে তারা ত্রাণ খালাস করে।

এরপর ট্রাকগুলো বড় পণ্যবাহী জাহাজে করে পারাপারের জন্য আবারো জাহাজে ফিরে আসে। পণ্যবাহী জাহাজগুলো সাইপ্রাস থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেয়।

ইউএস আর্মি সেভেন্থ ট্রান্সপোর্টেশন ব্রিগেডের যৌথ টাস্ক ফোর্সের কমান্ডার কর্নেল স্যামুয়েল মিলার বলেন, জাহাজগুলো দিনে অন্তত পাঁচবার ঘাটে ত্রাণ নিয়ে যেতে পারে।

জেটিতে ঢেউ আছড়ে পড়ার সময় তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘এখানে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি বড় জাহাজ থেকে ওই ভাসমান জেটিতে মানবিক সহায়তা গ্রহণ করা। সময়ের সাথে সাথে আমরা সংগঠিত করার কাজ শিখছি এবং আমরা আরো ভালো করেছি।’

উত্তাল সমুদ্র ও বাতাসের কারণে সামরিক বাহিনী গাজার সৈকত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর ১৯ জুন ভাসমান জেটিটি গাজার উপকূলে নোঙর করা হয়। একইভাবে মে মাসে জেটি ভেঙে যাওয়ায় এবং চারটি মার্কিন সেনাবাহিনীর জাহাজ আছড়ে পড়ার পর তাদের কার্যক্রমে দুই সপ্তাহের বিরতি দিতে বাধ্য হয়েছিল, এতে তিন স্বেচ্ছাসেবী আহত হয়েছিলেন এবং একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল।

মিলার বলেন, লাইনে ফিরে আসার পর থেকে জেটিটি তীরে প্রতিদিন শত শত প্যালেট ত্রাণ সরবরাহ করছে।

জেটি থেকে, অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিকরা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসের পটভূমিতে ত্রাণের স্তূপ দেখতে পেয়েছিলেন। ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গাড়িগুলো ধীরে ধীরে উপকূলের বিধ্বস্ত ভবনগুলোর মধ্যে দিয়ে যেতে থাকে। দূরে সৈকতে তাঁবু খাটানো ছিল।

মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, এ পর্যন্ত প্রায় ছয় হাজার ২০০ টন ত্রাণ গাজার উপকূলে পৌঁছে দেয়া হয়েছে।

জেটি থেকে ত্রাণ সৈকতে পৌঁছালেও গাজায় ফিলিস্তিনিদের কাছে তা পৌঁছানো এখনো কঠিন। ৮ জুন পণবন্দীদের উদ্ধারে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী ওই এলাকা ব্যবহার করার পর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে জেটি থেকে ত্রাণ সরবরাহ স্থগিত করেছে জাতিসঙ্ঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। জেটির চারপাশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং ক্ষুধার্ত ফিলিস্তিনিরা ত্রাণ বিতরণ এলাকার দিকে গিয়ে ট্রাক থেকে ত্রাণ জব্দ ছিনিয়ে নেয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ত্রাণ আনার জন্য এই প্রকল্প চালু করেছে, যেখানে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরাইলের সামরিক আক্রমণের কারণে এই অঞ্চলের ৮০ শতাংশের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং একটি মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। আন্তর্জাতিক কর্মকর্তারা বলছেন, লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ কর্মকর্তারা জেটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, এর কার্যকারিতা সীমিত এবং এটি এই অঞ্চলে ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল অতিক্রমের বিকল্প নয়।

জাতিসঙ্ঘের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার এপিকে জানান, মানবিক ত্রাণ কর্মীদের আরো ভালোভাবে সুরক্ষার পদক্ষেপ না নেয়া হলে তারা গাজাজুড়ে সমস্ত ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত করার কথা বিবেচনা করছেন। যা গাজাকে আরো গভীর মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।

মে মাসের গোড়ার দিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ইসরাইলের আক্রমণের পর থেকে গাজার ফিলিস্তিনিরা জাতিসঙ্ঘের সহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। বেশিভাগ এলাকায় যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে এবং ত্রাণ সরবরাহ ধীর করে দিয়েছে। তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার জেটি পরিচালনাকারী সেনারা আশাবাদী ছিলেন।

মার্কিন নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন জোয়েল স্টুয়ার্ট বলেন, ‘আমি প্রতিদিন আমার নাবিকদের সাথে কথা বলি। তারা বুঝতে পেরেছে যে গাজার জনগণের জন্য আমাদের সহায়তা প্রয়োজন, যারা যুদ্ধের পরিস্থিতিতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।’
সূত্র : ইউএনবি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877